এক নবতর চর্চায় নিউ দিল্লির লেডি আরুইন কলেজে দেখা গিয়েছে ইশার আ-উ-ম-কার স্তব অনুশীলনের মাধ্যমে শরীরে সচেতন জল যোজনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ক্রীড়াবিদদের মধ্যে। ২০১১ তে দুমাস ধরে এই আয়োজন করা হয়েছিল, যা ডক্টর প্রীতি ঋষি লাল আয়োজিত ক্রীড়াবিদদের মধ্যে ধারাবাহিক রোগ চিকিৎসা ও ক্রীড়াপুষ্টি বিষয়ক গবেষণার অংশ ছিল। এটি পরবর্তীকালে অনুষ্ঠিত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়স শহরে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ফুড স্টাডিজ-এ পেশ করার হয়। এই পাঠচর্চা শ্রীময়ী অঞ্চল অগ্রবালের মূল গবেষণায় প্রকাশিতও হয়েছিল, যেখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল যুবক যুবতীদের মধ্যে জলপানের অভ্যাসের অগ্রগতির ওপর, বিশেষ করে পুরুষ হকি ক্রীড়াবিদদের অনুশীলনকালে। এবং এটা ছিল স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা (S.A.I.) সাইয়ের (Come And Play) ‘এসো এবং খেলো’ প্রকল্পের অংশ।

 

কেন আ-উ-ম স্তব?

শ্রীময়ী অঞ্চল অগ্রবাল এবং ডক্টর প্রীতি ঋষি লাল দেখেছিলেন ক্রীড়াবিদদের মধ্যে খেলা চলাকালীন প্রয়োজনীয় জলপান করার পাঠ দেওয়া সত্ত্বেও বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই খেলা চলার কালে জল বিয়োজনের শিকার হয়ে কষ্ট পাচ্ছেন, যা তাদের শরীরের শক্তি ও খেলার ক্ষমতাকেও কমিয়ে দিচ্ছে এবং সর্বোপরি তারা এক দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

ডক্টর লাল বলেন, ক্রীড়াবিদদের আগে থেকেই শরীরের জলের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে শিক্ষিত করা হয়েছিল, এ বিষয়ে তাদের ইতিমধ্যে যথেষ্ট তথ্যও দেওয়া হয়েছে, এমনকি পরীক্ষামূলক ট্রেনিংও দেওয়া হয়েছে ডেমো সহযোগে। যখন আমরা তাদের শরীরে জল যোজনের বিষয়ে তাদের জ্ঞান কতটা আছে তার পরীক্ষা নিয়েছি তখন তাদের মধ্যে অধিকাংশই শতকরা একশ স্কোর করেছেন। তারা জানেন তাদের কী করা দরকার কিন্তু তারা তা সবসময় করেন না। তাই তাদের জ্ঞান ও তাদের অভ্যাসের পরিবর্তনের মধ্যে একটা সংযোগ স্থাপনের প্রয়োজন ছিল। শরীরে তৃষ্ণার মাত্রা বিষয়ে একটা সচেতন চৈতন্যের প্রয়োজন ছিল। আ-উ-ম স্তবই কি তার সমাধান?

গবেষণামূলক অনুসন্ধানে ইতিমধ্যেই আ-উ-ম স্তব ধ্যানে দেহতাত্ত্বিক ও মনস্তাত্ত্বিক উন্নতির অনুসন্ধান করা হয়েছে। শ্রীময়ী অগ্রবাল ও ডক্টর লাল খুব পরিষ্কার ভাবে এটা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন যে ঈশা প্রদত্ত আ-উ-ম স্তব ধ্যান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শেখানো ওম স্তব ধ্যানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। শ্রীময়ী অগ্রবাল বলছেন, “সাম্প্রতিক ভারতীয় পাঠে ওম স্তবকে এক-স্বরা শব্দ (ওঁ) হিসেবে বিবৃত করা হচ্ছে, কিন্তু ইশা ফাউন্ডেশন এটিকে ত্রী-স্বরা হিসেবে উপস্থাপিত করছে।” শাম্ভবী-মহামুদ্রার সুফলের ওপর যে গবেষণাগুলো করা হয়েছে, সেগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলছেন, “যে সকল যোগাভ্যাসে আ-উ-ম এর স্তব রয়েছে দেখা গিয়েছে সেগুলতে মস্তিষ্কের কার্যকলাপের বিকাশ ঘটে।” আ-উ-ম স্তবকে জ্ঞান এবং আচরণের মধ্যে সেতুবন্ধনের উপকরণ হিসেবে এই কারণেই বেছে নিয়েছেন গবেষকেরা, তাদের জল-যোজনের পরীক্ষাগুলোতে।

পরীক্ষামূলক পাঠ চর্চার কালে প্রথমে মোট তিরিশজন খেলোয়াড়কে নির্বিচারে দু-ভাগে ভাগ করা হয়: একদল নিয়ন্ত্রিত ও প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত এবং প্রথামাফিক জলপানে অভ্যস্ত। আর একদল পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথাগত শিক্ষা নেবার পরেও প্রতিদিন ২১ মিনিট ধরে টানা ২১ দিন আ-উ-ম-কার যোগাভ্যাস করেছেন। এক টানা একুশ দিন অভ্যাস শেষে পরীক্ষায় দেখা গেল যে ক্রীড়াবিদরা আ-উ-ম-কার অভ্যাসের মধ্যে ছিলেন খেলার পরে তাদের শরীরে জলের মাত্রা তুলনামূলক ভাবে নিয়ন্ত্রিত দলের চেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে ভালো। এটা দেখা গিয়েছে তাদের খেলার মানের উন্নতিতে, এমনকি হৃদস্পন্দনের মাত্রাতে ও দৈহিক সামর্থ্যের ক্ষেত্রেও। এমনকি খেলোয়াড়রা খেলা শেষে জানাতে ভোলেননি তারা অনেক খুশি, শান্ত ও অনেক সংহত।

“অনেক অংশগ্রহণকারীই তাঁদের কর্মশালায় ও খেলায় যোগ দেওয়ার বাইরেই এ নিয়ে আমার সঙ্গে তাদের মত বিনিময় করেছিলেন, এবং তাদের নানা অনন্য উপকারিতাও হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একজন বলেছিলেন তিনি এখন বাড়িতে পরিবারের সবার সঙ্গে থাকতে সচ্ছন্দ বোধ করেন। এই পরীক্ষাটির মধ্য দিয়ে যাওয়ার ফলে তারা অনেক প্রাজ্ঞ ও অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। এই পাঠ তাদের অনেক সচ্ছন্দ ও সম্ভাবনার পথ খুলে দিয়েছে। আমরা এর মধ্যেই আরও দুটো গবেষণা করার কথা ঠিক করে ফেলেছি, ঈশার ধ্যানের সুফল নিয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে,” ডক্টর লাল জানালেন।

Photo no.1 courtesy of DeaPeaJay@Flickr

For further details about the study, contact iii.research@ishafoundation.org or 91-9442504607.

Isha Foundation also offers Isha Kriya, a free online meditation. Try it out here