ঈশা যোগ সেন্টার দ্বারা কোনও ভূমি দখল বা হাতির করিডোরে অনুপ্রবেশ করা হয়নি: RTI-এর উত্তরে তামিলনাড়ু সরকারের প্রতিক্রিয়া

আরও পড়ুন

অভিযোগ: ঈশা ফাউন্ডেশন বনাঞ্চল বা অরণ্য ভূমি দখল করেছে

সত্য: ঈশা যোগ সেন্টার বনাঞ্চল বা অরণ্য ভূমিতে  নির্মিত নয় এবং 100 শতাংশ পাট্টা জমিতে নির্মিত।

প্রমাণ 1: 2013 সালে, তামিলনাড়ু বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঈশার বিরুদ্ধে অভিযোগের জবাবে স্পষ্ট নথিপত্র দিয়েছিলেন যে সেন্টারটি শুধু পাট্টা জমিতেই নির্মিত এবং বনভূমির কোনও অংশ লঙ্ঘন করেনি । নথির রেফারেন্স নম্বর হল CFCIT/07/2013।

অভিযোগ: ঈশা ফাউন্ডেশন একটি হাতির করিডোরে  অবস্থিত

সত্য: ঈশা যোগ সেন্টার কোনও হাতির করিডোরের মাঝে আসে না।

প্রমাণ 1: তামিলনাড়ু বন বিভাগ কোয়েম্বত্তূর জেলায় কোনও হাতির করিডোর ঘোষণা করেনি

যে অঞ্চলে ঈশা যোগ সেন্টার অবস্থিত সেখানে দেখা যাচ্ছে তামিলনাড়ু বন বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বমোট ‘শূন্য হাতির করিডোর’ ঘোষণা করেছে । বরং, সেন্টারটি যে স্থানে অবস্থিত সেই অঞ্চলে তথা সমগ্র জেলায় কোনও হাতির করিডোর ঘোষিত নেই। 2013 সালে একটি আর.টি.আই (RTI) -এর মাধ্যমে ঈশা এটা দুবার ধরে যাচাই করে দেখেছে।

বন বিভাগ দ্বারা ঘোষিত নিকটতম হাতির করিডোর গুলি পার্শ্ববর্তী নীলগিরি পার্বত্য অঞ্চল সংলগ্ন জেলায় অবস্থিত। তামিলনাড়ু বন বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টে (অনলাইনে প্রকাশিত) তামিলনাড়ুর মধ্যে পাঁচটি করিডোর চিহ্নিত করেছে, যেগুলো সবই নীলগিরির সেগুর মালভূমিতে অবস্থিত: সিঙ্গারা-মাসিনাগুড়ি, চেম্মনাথাম-মাভিনহাল্লা,বোক্কাপুরম-মাভিনহাল্লা, গ্লেনকোরিন এবং ভালজথোত্তম। এই 5টি করিডোর নীলগিরি জেলায় পাওয়া যায় - কোয়েম্বত্তূর জেলায় নয়।

প্রমাণ 2: কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রক সম্ভাব্য হাতির করিডোর শনাক্ত করে।  ঈশা এই করিডোরেও নেই

2010 সালে, পরিবেশ ও বন মন্ত্রকের এলিফ্যান্ট টাস্ক ফোর্স গাজাহ (Gajah) প্রকাশ করে, ভারতে হাতির সুরক্ষার উপর একটি বিস্তৃত গবেষণা। এই প্রতিবেদনটিতে দক্ষিণ ভারতের 10 টি শীর্ষ অগ্রাধিকার এবং 10 টি দ্বিতীয় অগ্রাধিকারের হাতির করিডোর চিহ্নিত করা হয়েছে৷ ঈশা এই সমস্ত করিডোরের মধ্যে কোনোটাতেই আসে না।

প্রমাণ 3: WTI হাতির করিডোর সনাক্ত করে। ঈশা এই সমস্ত করিডোরে নেই

2005 সালে, ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (WTI), একটি প্রথম সারির ভারতীয় প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা, এবং এশিয়ান ন্যাচারাল কনজারভেশন ফাউন্ডেশন (ANCF), রাজ্য বন বিভাগের সহযোগিতায়, প্রজেক্ট এলিফ্যান্ট এবং বেশ কিছু গবেষক, রাইট অফ প্যাসেজের প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করেছেন: ভারতের এলিফ্যান্ট করিডোর, যা ভারতে 88 টি হাতির করিডোরকে চিহ্নিত করে। 2017 সালে, দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে, যা 101 টি হাতির করিডোর চিহ্নিত করে। ঈশা যোগ সেন্টার এই 101 টি করিডোরের কোনোটিতেই অবস্থিত নয়।

এই প্রকাশনাটি ভারতে হাতির করিডোর নিয়ে সবচেয়ে ব্যাপক একটি  গবেষণা। উল্লেখ্য বিষয় হল এই করিডোরগুলি সরকার কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি, তবে হাতিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ করিডোর হিসেবে প্রস্তাবিত হয়েছে। এই সমস্ত প্রকাশনা অনলাইনে পাওয়া যায় এবং সহজেই চেক করা যায়।

নীচের দুটি মানচিত্র WTI রিপোর্ট থেকে নেওয়া হয়েছে এবং এগুলি  কোয়েম্বত্তূর বন বিভাগের প্রস্তাবিত এলিফ্যান্ট করিডোরগুলি দেখায়। আপনি দেখতে পাচ্ছেন, ঈশা যোগ সেন্টারকে এই করিডোরের মধ্যে বা তার কাছাকাছি কোথাও, কোনও মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে না।

প্রতিবেদনে সমস্যাযুক্ত বিল্ডিংগুলিকেও চিহ্নিত করা হয়েছে – ঈশাতে যা একটিও নেই৷

গবেষণায় ব্যক্তিগত জমি, গ্রাম এবং মানুষের তৈরী কাঠামো চিহ্নিত করা হয়েছে যা এই করিডোরের মধ্যে এবং কাছাকাছি অবস্থিত। এগুলোর কোনোটিতেই ঈশা যোগ সেন্টার বা ঈশা-সম্পর্কিত অন্য কোনও কাঠামোর উল্লেখ নেই।

প্রমাণ 4: WWF হাতির করিডোর সনাক্ত করে। ঈশা এই করিডোরেও নেই

WWF, একটি প্রতিবেদনে, তামিলনাড়ুতে সম্ভাব্য হাতির করিডোর প্রস্তাব করেছে। আবারও, ঈশা যোগ সেন্টার এই করিডোরের কোনওটিতেই নেই।

একটি এলিফ্যান্ট করিডোর কি?

WTI রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, “এমনকি একটি হাতির করিডোরের সংজ্ঞায়ও স্পষ্টতার অভাব ছিল। এটি হাতির আবাসস্থলকে হাতির করিডোর হিসাবে ভুল ব্যাখ্যার দিকে পরিচালিত করেছে।"

 তারা স্পষ্ট করে যে সমস্ত হাতির আবাসস্থলকে হাতির করিডোর হিসাবে ভুল ব্যাখ্যা করা উচিত নয়। এলিফ্যান্ট করিডোর হল 100 মিটার থেকে 1 কিমি প্রস্থের ভূমির সংকীর্ণ স্ট্রিপ, যা হাতিদের বসবাসের দুটি জায়গার মধ্যে ট্রানজিট বা চলাচল প্যাসেজ হিসাবে কাজ করে। এগুলো এমন এলাকা নয় যেখানে হাতি থাকে এবং তার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সেখানে ব্যয় করে।

হাতির করিডোর সংক্রান্ত নিয়ম ও প্রবিধান গুলো শুধুমাত্র জমির এই সরু স্ট্রিপের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, এবং সাধারণ এলাকা বা অঞ্চলের জন্য নয়।

স্পষ্ট করে বললে, ঈশা যোগ সেন্টার কোনও বনাঞ্চল বা অরণ্য ভূমিতে পড়ে না, আর ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া, ডব্লিউ. ডব্লিউ. এফ বা তামিলনাড়ু বন বিভাগের গবেষণা অনুসারে কোয়েম্বত্তূর অঞ্চলের কোনও এলিফ্যান্ট করিডোরেও এটি নেই।