চৈতন্য হওয়া যায়, অভ্যাস করা যায় না
‘চৈতন্য’ সম্পর্কে ভুল ধারণা পরিষ্কার করছেন সদগুরু এবং কীভাবে আপনি এই মাত্রাটি লাভ করতে পারবেন তার ব্যাখ্যা করছেন।

সচেতনতা আপনার কোনো কার্যের ফলে ঘটে না, এটি তখনই ঘটে যখন আপনি এটিকে ঘটতে দেন। জীবন আপনার সাথে ঘটছে, কিন্তু আপনার কোনো কাজের ফলস্বরূপ নয়। আমরা যাকে চেতনা বলছি তা হল আপনার জীবন এবং আপনার অস্তিত্বের ভিত্তি। এটি এমন কিছু নয় যা একটি নির্দিষ্ট সময়ে করা যায়, বা করা যায় না। সচেতনতা সর্বদাই বিদ্যমান, তা সে আপনি এই দেহে থাকুন বা দেহত্যাগ করুন। প্রশ্ন কেবল এটাই, যে এটি কি আপনার কাছে উপলব্ধ? আপনি সর্বদা সচেতনতার কাছে উপলব্ধ – আপনি এটাকে এড়াতে পারবেন না – কিন্তু এটিও কি আপনার জন্য উপলব্ধ?
চেতনা সর্বদা আপনার জীবনকে প্রভাবিত করছে। আপনি এটি উপলব্ধি করতে পারছেন কিনা সেটিই প্রশ্ন। আপনি এটাকে এড়িয়ে চলেন কারণ আপনি যদি এটি উপলব্ধি করেন তাহলে আপনি অদৃশ্য হয়ে যাবেন - আপনার অস্তিত্ব থাকবে না। আপনার কোনও অহংকার, লজ্জা, বেদনা বা আনন্দ থাকবে না, তবে আপনি যাই করতে চাইবেন তাই করতে পারবেন। দেখুন, আমি যা করতে চাই তা সবই করছি, তবে আসলে কিছুই করছি না। আপনার জীবনে কোনও কিছুরই অর্জন থাকবে না এবং নিজের মধ্যে আপনি কারোর চেয়ে ভাল বা খারাপ হতে পারবেন না। আপনি উপরে বা নীচে যাবেন না, তবে আপনি যা চান তা করতে পারবেন। আপনি এই জীবন অভিজ্ঞতাটি যেভাবে খুশি কাজে লাগাতে পারবেন।
জীবনকে যেভাবে খুশী গড়ে তোলার স্বাধীনতা
যদি আমি চাই তবে এই মুহূর্তে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমি নিজেকে চূড়ান্ত দুঃখী করে তুলতে পারি, শোকে এবং অশ্রুতে। অথবা নিজেকে আনন্দময় করে তুলতে পারি। তবে উভয় ক্ষেত্রেই আমি জানি এটি আমারই তৈরি। জীবনের তথাকথিত লীলাখেলা সেখানে নেই, তবে স্বাধীনতা রয়েছে। আপনি এর থেকে অনেক কিছু করতে পারেন। স্বাধীনতা যদি আপনার সর্বোচ্চ লক্ষ্য হয় তবে আপনাকে অবশ্যই সরলভাবে পরিত্যাগের ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এর অর্থ এই নয় যে আপনি নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। দায়িত্ত্ব মানুষ সর্বপ্রথম পরিত্যাগ করতে চায়, কারণ তারা তাদের সমস্ত অসুবিধাগুলি - তাদের পরিবার এবং সমস্ত কিছু ত্যাগ করতে চায়। তবে তারা নিজস্ব মতামত, দর্শন এবং জীবনের প্রতি অহংকারী দৃষ্টিভঙ্গি ত্যাগ করে না।
পরিত্যাগের অর্থ এটা বা ওটা ত্যাগ করা নয় - আপনি নিজেকে ত্যাগ করুন। আপনি নিজে ছাড়া আপনার কাছে বাকি সমস্ত কিছুই মূল্যবান। আপনি যদি তা করেন তবে জীবন ভাল নয়, খারাপও নয়। এটি সুন্দর বা কুৎসিত নয় - এর কোনো নাম নেই। মানুষ জীবনকে যেভাবে জানে এটি ঠিক তাও নয়। বিষয় এটাই যে, আপনার যদি প্রাথমিক স্তর পার করা হয়ে গিয়ে থাকে, তবে সময় এসে গিয়েছে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যাওয়ার।