logo
logo

মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির: এই শিব লিঙ্গের শক্তির উৎস কী?

মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির ভারতের অন্যতম উল্লেখযোগ্য মন্দির। এর অতীন্দ্রিয়বাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানুন। মধ্যপ্রদেশের উজ্জইনেে অবস্থিত, এই জ্যোতির্লিঙ্গটি ভারতের অগণিত শিব ভক্তদের আরাধ্য 12 টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি।

মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির: উৎপত্তি ও তাৎপর্য

সদগুরু: উজ্জইনের মহাকালেশ্বর মন্দিরটি চন্দ্রসেন নামক একজন রাজা নির্মাণ করেছিলেন। তিনি একজন মহান শিবভক্ত ছিলেন। উজ্জয়িন সেই সময় ভক্তদের এবং জ্ঞান পিপাসুদের এক শহর হয়ে উঠেছিল। উজ্জইনের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন এমন সমস্ত ব্যক্তিরা চন্দ্রসেনকে আক্রমণ করেছিলেন। উজ্জয়িন প্রায় ভারতের দ্বিতীয় কাশীর মতো ছিল, যেখানে জ্ঞান, শিক্ষা এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিতরণই ছিল শহরের প্রধান কেন্দ্র। সেই উদ্দেশ্যেই এই শহরে মানুষ এসেছিলেন। উজ্জয়িন কোনও বাণিজ্যিক সড়কপথের পাশে অবস্থিত না হওয়া সত্ত্বেও সেই সময়ে অবন্তিকা নামে পরিচিত উজ্জয়ন, শুধুমাত্র জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হওয়ার সুবাদেই বড় হয়ে উঠেছিল। যদিও, কিছু লোক এমনও ছিলেন যারা এটা পছন্দ করেননি এবং শহরটি ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন।

যখন তারা আক্রমণ করেছিল, তখন চন্দ্রসেন শিবের কাছে প্রার্থনা করেন। শিব মহাকালরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং শত্রুদের একটি নির্দিষ্ট উপায়ে আত্মভূত করে চন্দ্রসেনকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেন যাতে তিনি আধ্যাত্মিকতা এবং জ্ঞানের প্রচার চালিয়ে যেতে পারেন।

মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের শক্তি

যদিও আমি সাধারণত মন্দির পরিদর্শন করি না, তবুও ঘটনাক্রমে আমি উজ্জইনের মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গে গিয়েছিলাম। মন্দিরটিকে নানাভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। আক্রমণকারীরা মন্দিরটি ভেঙ্গে ফেলেছিলেন। এবং এটিকে দু-তিনবার পুনর্নির্মিত করা হয়েছিল, কিন্তু তারপরেও, আপনি যদি সেখানে বসেন, এই যে ছোট্ট মূর্তিটি, এই যে হাজার বছর ধরে সেখানে বিরাজমান পাথরের এই ছোট টুকরোটি, সেটাও আপনাকে পুরোপুরি বিহ্বল করে দেবে। এটা এমনভাবে অনুকম্পিত হচ্ছে, যে যেন এই গতকালই তৈরি হয়েছে। যদি উপায় জানেন, তবে এই প্রকৃতির একটি লিঙ্গের উপস্থিতিতে আপনি আপনার দেহতন্ত্রের গঠনপ্রকৃতিকে সম্পূর্ণরূপে পুনর্গঠিত করতে পারেন এবং আপনার দেহতন্ত্রের পুনর্বিন্যাস করতে পারেন।

মহাকাল মন্দির এবং সেখানে প্রতিষ্টিত লিঙ্গটির প্রকৃতি অসাধারণ। এটি আপনাকে আপনার অস্তিত্বের ভিত থেকেই নাড়িয়ে দেবে। এটি একটি অবিশ্বাস্য প্রাণপ্রতিষ্ঠা, যার একমাত্র উদ্দেশ্য আপনাকে কোনও না কোনওভাবে বিলীন করা। সেখানে শিব যেভাবে অভিব্যক্তি পেয়েছেন তাতে একটি নির্দিষ্ট সাবলীল অনাবিকৃত ভাব, একটা অনাবিল আদিমতা অনুভব করা যেতে পারে। এই মন্দিরে যাওয়ার জন্য অবশ্যই সঠিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে কারণ এটি প্রচণ্ড শক্তিসম্পন্ন এবং ক্ষীণ-হৃদয়ীদের জন্য নয়।

প্রতিদিন, মহাকালের কাছে যে নৈবেদ্যটি অর্পণ করতে হয় তা হল শ্মশানের তাজা ছাই, কারণ এটিই তিনি পছন্দ করেন এবং এটাই তিনি যে অবস্থায় আছেন সেই অবস্থা বজায় রেখেছে। এটি কেবল একটি সাংস্কৃতিক দিক নয়। এটার একটা বিজ্ঞান আছে। অভিজ্ঞতার নিরিখেও, শ্মশানের ছাই এবং অন্য কোনও ছাইয়ের মধ্যে বিপুল পার্থক্য রয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটিই মহাকালের প্রকৃতি। এই মহাকাল রূপের উপস্থিতি এমন যে, যখন সেখানে যান, সবকিছু পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। তার মানে আপনি ভৌত-জড়তা থেকে মুক্ত হয়ে গেছেন। এটি আপনাকে আপনার পরম মুক্তির দিকে চালিত করে।

আপনি যদি এটি মৃদুভাবে করতে চান সেক্ষত্রে ধ্যানলিঙ্গে মহাকালের একটি মাত্রা রয়েছে। কিন্তু সেটা মোড়কে মুড়ে রাখা হয়েছে যাতে কেবল যারা এটা চান শুধু তাঁদের কাছেই এটা প্রকাশ পায়। কিন্তু আপনি যদি জোর করে এটি করতে চান,  যদি সত্যিই প্রবল ধাক্কার প্রয়োজন অনুভব করেন এবং যদি সাহসী হন, সেক্ষেত্রে মহাকাল মন্দির একটি অভূতপূর্ব প্রক্রিয়া।

শিবের মহাকাল রূপ: শুক্রাচার্য এবং সঞ্জীবনী মন্ত্রের গল্প

শিবের বিভিন্ন রূপের মধ্যে 'কাল' বা 'মহাকাল' একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং উগ্র রূপ। মহাকাল রূপে তিনি কালের অধিপতি। যাঁরা মুক্তি বা পরম মুক্তির অভিলাষী, তাঁদের জন্য এই যে মাত্রাটিকে মহাকাল বলে উল্লেখ করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

একবার ঘটনা ঘটেছিল। সমস্ত অসুরদের গুরু মহান ঋষি শুক্রাচার্য, শিবের উপাসনায় প্রচুর তপস্যা করেছিলেন এবং শিবকে আবির্ভূত হতে হয়েছিল। তিনি উপস্থিত হলে শুক্রাচার্য অমরত্ব কামনা করলেন। শিব বললেন, "ওটা সম্ভব নয়। যা জন্ম হয়েছে তাঁদের সবাইকেই মরতে হবে। অন্য কিছু চাও।" তখন শুক্রাচার্য বললেন, "আমাকে পুনর্জীবনের শক্তি দাও, যাতে আমি যেকোনও ধরনের ক্ষত আর রোগ সারিয়ে পুনরুজ্জীবিত করতে পারি।" শিব ছিলেন চূড়ান্ত নিরাময়কারী এবং সমস্ত ভেষজউদ্ভিদ ও ওষুধের কর্তা। তিনি শুক্রাচার্যকে সঞ্জীবনী মন্ত্র দিলেন, যা যে কোনও ধরণের রোগ, ক্ষত বা আঘাত থেকে মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে।

শুক্রাচার্য যখন এই সঞ্জীবনী মন্ত্রটি পেলেন, তখন অসুররা অত্যধিক সাহসী হয়ে উঠলেন এবং দেবতাদের বিরুদ্ধে বারম্বার যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। যে সমস্ত অসুররা যুদ্ধে কোনও প্রকারের ক্ষত নিয়ে পতিত হয়েছিল তাঁদের শুক্রাচার্য সঞ্জীবনী মন্ত্রবলে পুনরুজ্জীবিত করলেন। অবশেষে, অসুরদের বাহিনীর একজনও পরাহত না হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে লাগলেন।

দেবতারা খুব শঙ্কিত বোধ করলেন এবং অনুভব করলেন যুদ্ধাবস্থা তাঁদের জন্য অত্যন্ত প্রতিকূলে কারণ তাঁরা যতই যুদ্ধ করুক না কেন, অসুররা কেউই মরছে না, উপরন্তু দেবতাদের মৃত্যু হচ্ছিলই। তাঁরা ব্রহ্মার কাছে গেলে ব্রহ্মা শিবের দ্বারস্থ হয়ে বললেন, "আপনি শুক্রাচার্যকে এই ধরণের ক্ষমতা দিয়েছেন। আপনাকে অবশ্যই তাঁর হত্যা করতে হবে। অন্যথায়, পৃথিবীতে সম্পূর্ণ ভারসাম্যহীনতা দেখা দেবে। দেবতারা অত্যন্ত অসম লড়াই লড়ছে অসুরদের বিরুদ্ধে।" তখন শিব বললেন, “তাঁকে হত্যা করার দরকার নেই, আমি তাকে ধারণ করব।”

দেবতা এবং অসুরদের মধ্যে যুদ্ধের সময়, শুক্রাচার্য অনবরত মন্ত্র উচ্চারণ করছিলেন এবং সমস্ত অসুরদের আঘাত ও ক্ষত সরিয়ে তুলছিলেন। তারপর, দিগন্তের ওপারে, কৃত্তিকা নামক একটি ভয়ানক দৈত্য, এক বীভৎস রূপে অবতীর্ন হলো। তিনি ছিলেন শিবগণদের মধ্যে একজন। তিনি শুক্রাচার্যকে গিলে নিয়ে নিজের গর্ভে ধারণ করলেন, যেখানে তিনি ভ্রূণ হিসাবে থেকে যান। তাঁকে ধারণ করার ফলে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে ভারসাম্য পুনর্স্থাপিত হয়েছিল।

ব্রহ্মা খুব হতবাক হয়েছিলেন এবং ভাবছিলেন এইভাবে কোনও ব্যক্তিকে হত্যা না করে তাঁর জীবনকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা কেবলমাত্র মহাকালের পক্ষেই সম্ভব। শুক্রাচার্য কৃতিকার গর্ভে থাকলেন, এবং সঞ্জীবিনী মন্ত্র অকেজ হয়ে গেল। আরেক ভাবে বলা যায়, মহাকাল শুক্রাচার্যের জন্য সময়ের গতিই থামিয়ে দিয়েছিলন, যাতে তিনি আর এগোতে না পারেন।

মধ্যপ্রদেশের উজ্জইনে তৈরি মহাকালেশ্বর মন্দিরটি ছিল আসল “গ্রীনিচ মান সময়”!

ব্রিটিশরা ভারতে এসে সময়ের কেন্দ্রবিন্দুকে গ্রীনিচ মান সময়ে স্থানান্তর করার বহু সহস্রাব্দ আগে, মধ্য ভারতের মহাকালেশ্বর দেবতার অবস্থানই সময়ের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। এটিই ছিল বিশ্বের মান সময়, কারণ মনে করা হতো যে এখান থেকেই সময় শুরু হয়েছিল। তাই তারা সেখানে একটি নির্দিষ্ট দেবতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যাকে মহাকাল বলা হয়।

যোগ বিজ্ঞানে, আমরা দেখি, শুধুমাত্র সময় আছে, স্থান নেই। স্থান সময়ের একটি পরিণতি। সময় না থাকলে জায়গা থাকত না। স্থান একটি মায়া যা সৃষ্টি হয়েছে, আমরা আমাদের ভৌত-জড় প্রকৃতির সাথে জড়িত বলে। আপনি যদি আপনার জড় প্রকৃতির সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তাহলে হঠাৎ দেখবেন সময় নেই এবং এর ফলে স্থানও নেই।

“সময়” এবং “স্থান” উভয়ের জন্য আমাদের একটি সাধারণ শব্দ আছে, আমরা তাকে বলি “কাল “। কাল মানে সময়, এবং কাল মানে শূন্যতাও। শূন্যতা মানে স্থান। যখন আমরা বলি একটি হলঘর খালি, আমরা বলতে চাই এখানে জায়গা আছে। হলঘর ভরা থাকলে আমরা বলি এখানে জায়গা নেই। আমরা সরলভাবে এটাই বোঝাই। তবে সময় এবং স্থান উভয়ের জন্য একই শব্দ ব্যবহার করা হয় কারণ স্থান সময়ের দ্বারা সৃষ্টি হয়। যদি সময় না থাকে, তবে স্থানও থাকবে না।

যোগে, আমরা সময়কে দুটি ভিন্ন মাত্রায় দেখি: কাল এবং মহাকাল। মহাকাল হলো বৃহত্তর সময়। দৈনন্দিন জীবনে, আমরা সময়কে বুঝি চক্রাকারে গতিবিধি হিসাবেই – পৃথিবীর আবর্তন একটি দিন, চাঁদের পরিক্রমণ একটি মাস, পৃথিবীর পরিক্রমণ একটি বছর ইত্যাদি। কিন্তু মহাকাল বা বৃহত্তর সময় কোনও চক্রাকার গতির পরিণতি নয়।

চক্রাকার গতি ভৌত প্রকৃতির কারণে হয়। ভৌত প্রকৃতির কারণেই জন্ম-মৃত্যু, সবকিছুর সূচনা-সমাপ্তি - এই সকল রূপে সময় বিদ্যমান। প্রতিটি পরমাণু, ইলেকট্রন এবং প্রোটনের নির্দিষ্ট বয়স আছে। এমনকি গ্রহ, সৌরজগৎ এবং সূর্যেরও একটা বয়স আছে। কোনও এক সময়ে তাদের জন্ম, এবং কোনও এক সময়ে তারা শেষ হবে। তাদের মৃত্যু বিস্ফোরণের আকারে হবে নাকি তারা ধীরে ধীরে ম্লান হওয়ার মাধ্যমে শেষ হবে, তা নিয়ে আমরা বিতর্ক করতে পারি। তবে ভৌত প্রকৃতি চিরস্থায়ী নয়। এর শুরু আছে এবং শেষ আছে। এই কারণেই আমরা সময়কে সাধারণত এই অর্থে দেখি। কিন্তু চক্রাকার প্রকৃতির বাইরেও সময় আছে। তাকেই আমরা মহাকাল বলি।

মহাকালেশ্বর লিঙ্গ ও মুক্তি

একজন আধ্যাত্মিক অনুসন্ধানীর সমগ্র আকাঙ্ক্ষাই হল মুক্তি বা মোক্ষ লাভ করা, যার অর্থ আপনি ভৌত প্রকৃতির গতিবিধিকে অতিক্রম করতে চান। অন্যভাবে বলতে গেলে, আপনি অস্তিত্বের চক্রাকার প্রকৃতিকে অতিক্রম করতে চান। অস্তিত্বের চক্রাকার প্রকৃতি অতিক্রম করা মানে জীবনের পুনরাবৃত্তিমূলক প্রক্রিয়াকে অতিক্রম করা। জীবনের পুনরাবৃত্তিমূলক প্রক্রিয়াকে অতিক্রম করা মানে আপনার যে বাধ্যতামূলক প্রবৃত্তি আছে তা অতিক্রম করা। এই যাত্রা বাধ্যতামূলক প্রবণতা থেকে চেতনায় উত্তরণেরই যাত্রা।

যদি আপনি বাধ্যতামূলক প্রবণতা থেকে চেতনার দিকে যেতে চান, তাহলে আপনার বর্তমান শারীরিক-ভৌত অস্তিত্বের চক্রাকার গতির প্রকাশ স্বরূপ যে সময়ের সীমিত অভিজ্ঞতা, তাকে অতিক্রম করতে হবে। আপনি যদি শারীরিকতার ভিত্তি বা শারীরিকতার সীমাবদ্ধতা ছাড়া সময়ের অভিজ্ঞতা লাভ করেন, তখন আমরা সেই সময়কে 'মহাকাল' বলি। মহাকাল নামক কোলের উপরেই সৃষ্টির কণা-কণিকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। গ্যালাক্সিগুলি বিশাল, কিন্তু তবুও তারা সীমাহীন শূন্য স্থানের বুকে সৃষ্টির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিন্দুই। একটি পরমাণুর নিরানব্বই শতাংশ বা তারও বেশি অংশ শূন্যতা। সেটাই মহাকাল।

যদিও পরমাণু চক্রাকার গতিতে গতিমান, তারও নিরানব্বই শতাংশের বেশি অংশ শূন্যতাই। বৃহত্তর মহাবিশ্বেও নিরানব্বই শতাংশের বেশি অংশ শূন্যতা। বিশাল গ্যালাক্সিগুলি চক্রাকার গতিতে রয়েছে, কিন্তু নিরানব্বই শতাংশের বেশি অংশ শূন্যতা। মহাকালের কোলেই সৃষ্টির রচনা ঘটে। আপনি সৃষ্টির সীমিত বিন্দুগুলির সাথে যদি জড়িত থাকেন, তবে আপনি সময়কে চক্রাকার গতি হিসাবেই অনুভব করবেন। এই মাত্রাটিকেই সংসার বলা হয় – যার অর্থ চক্রাকার গতি।

যদি আপনি এটি অতিক্রম করেন, তবে আমরা একে বলি 'বৈরাগ্য'। এর মানে আপনি স্বচ্ছ হয়ে উঠেছেন। আপনি যদি স্বচ্ছ হন, তাহলে আপনি আলোকে বাধা দেন না। আপনি যদি আলোকে বাধা না দেন, তার মানে আপনি জীবনের বাধ্যতামূলক প্রকৃতি বা চক্রাকার গতি থেকে মুক্ত হয়েছেন। যদি আপনি জীবনের চক্রাকার গতি থেকে মুক্ত হন, তবে আমরা বলি, 'আপনি মুক্তি বা মোক্ষ লাভ করেছেন।' তাই যারা মোক্ষ বা পরম মুক্তি লাভের আকাঙ্ক্ষা করছেন, তাদের জন্য যে মাত্রাটিকে আমরা মহাকাল বলছি, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

    Share

Related Tags

শিব তত্ত্ব

Get latest blogs on Shiva

Related Content

কেদারনাথের জ্যোতির্লিঙ্গ: কেদারনাথে শিবের স্পর্শ:আধ্যাত্মিক যাত্রার চূড়ান্ত গন্তব্য