লক্ষ্মী মাঞ্চু: নমস্কারম সদগুরু! আমার প্রশ্ন হল, মা-বাবার সাথে সম্পর্ক আমাদের নিজের জীবনে কি প্রভাব আদৌ বিস্তার করে ? যদি করে, কীভাবে এই সম্পর্ককে আরও সুন্দর করতে পারি ?

সদগুরু: নমস্কারম লক্ষ্মী! যোগবিজ্ঞানের সূত্র অনুযায়ী আমরা যেভাবে জীবনকে দেখি, তাতে মানব জীবন একটি পূর্নাঙ্গ চক্র যদি কোনও ব্যক্তি যদি ৮৪ বছর বাঁচেন। জীবনের এই পূর্ণাঙ্গ চক্রটি এক হাজার আটটি চন্দ্রাবর্তন চক্রের সমন্বয়ে তৈরি এবং জীবনের প্রথম এক চতুর্থাংশে মা-বাবার শক্তির প্রভাব সর্বাধিক হয়। কর্মের প্রভাবের প্রেক্ষিতে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত বাবা-মা’র প্রভাব থাকে আমাদের ওপর। তারপর আমাদের ওপর বাবা-মা’র প্রভাব থাকার কথা নয়। কিন্তু আমাদের জন্য ওরা যা করেছেন, ওরা এই পৃথিবীতে আমাদের এনেছেন, ভালবেসে আমাদের একাত্ম করে নিয়েছেন, এই সব কিছুর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ থাকতেই পারি।

 

কিন্তু একুশ বছর বয়সের পর, কোনও ব্যক্তিরই তার পারিবারিক ধাঁচ থেকে প্রভাবিত হওয়া উচিত নয়, কারণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, এটা নতুন জীবন এবং এই জীবনটা যেন পুনরাবৃত্তি না হয়ে যায় তার আগের প্রজন্মের। তাই সর্বোচ্চ একুশ বছর পর্যন্ত যে কর্মের প্রভাব থাকে , তা নিশ্চিতভাবেই সবাইকে প্রভাবিত করে। কিন্তু একুশ বছরের পর, এই প্রভাব আর থাকে না। এরপর হয়তো বাবা-মা’র ওপর মানসিক নির্ভরতা বা আর্থিক নির্ভরতা বা সামাজিক নির্ভরতা থেকেই যায় বহু মানুষের ক্ষেত্রে, কিন্তু একুশ বছর বয়সে গিয়ে ওই কর্মের বন্ধন ছিন্ন হওয়া যায়। সুতরাং, একুশ বছর বয়সের পর আমাদের বাবা-মা’র ভরসায় থাকা উচিত নয়। তারপর যা থাকে তা মূলতঃ সম্পর্কের বন্ধন, ভালবাসার বন্ধন ও কৃতজ্ঞতার বন্ধন। ওই অনুভূতি চিরদিনই থেকে যেতে পারে। 

সম্পাদকের কথা: যে প্রশ্নের উত্তর দিতে সকলেই অপারগ, যদি এমন কোনও বিতর্কিত বা স্পর্শকাতর প্রশ্ন থাকে অথবা যদি কোনও আপাত কঠিন প্রশ্ন নিজেকে ক্রমাগত বিব্রত করতে থাকে, সেক্ষেত্রে জীবনের সব অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। সদগুরুকে আপনার প্রশ্ন করুন UnplugWithSadhguru.org.

Youth and Truth Banner Image