প্রশ্ন: ধ্যানলিঙ্গের সামনে ঐ তেঁতুল গাছটি কেন আছে যাতে কালো কাপড়ের টুকরো বাঁধা থাকে?

সদগুরু: ভারতে এটা সবসময়ই বলা হয়ে থাকে যে তেঁতুল গাছে ভূত থাকে। আপনি হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন যে রাত্রে তেঁতুল গাছে কোন প্রাণী বা পাখি আশ্রয় নেয় না। দিনের বেলায় তারা তেঁতুলের ফল খায় কিন্তু রাত্রে আপনি দেখবেন পাখিরা অন্য গাছে বসে আছে রাতের বিশ্রামের জন্য, কিন্তু তেঁতুল গাছে নয়। এর কারণ হলো অন্য যে কোনো গাছপালার থেকে তেঁতুল গাছে অক্সিজেনের মাত্রা খুবই কম। এই ধরনের আরও কয়েকটি গাছও রয়েছে কিন্তু তেঁতুল গাছটি বিশেষ ভাবে এরকম।

ধ্যানলিঙ্গের সান্নিধ্যে এমনকি সেই অস্তিত্বরাও অল্প সময়ের মধ্যে মুক্তি লাভ করে যারা নিজের মুক্তির জন্য কোন কাজ করে নি। কারণ তাদের গঠন ধরে রাখা যায় না।

বিদেহী জীবদের কাছে এই প্রাণের অনুপস্থিতি এবং অতি কম মাত্রার অক্সিজেন, এই দুইএর সমন্বয় মৃত্যু বা বিলীন হয়ে যাওয়ার মতো। সেই কারণেই তাদের এইসব গাছের দিকে যাওয়ার প্রবণতা থাকে।

একসময় প্রত্যেকটি শিব মন্দিরের সামনে একটি তেঁতুল গাছ থাকতো। এর কারণ, যাঁরা মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাঁরা এই সব অশরীরী জীবদের মন্দিরের দেবতার সঙ্গে থাকার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে চান নি। গাছটি এই সব জীবদের একটা থাকার জায়গা হিসেবে রাখা হতো।

আমাদের একেবারে ধ্যান লিঙ্গের সামনেই একটি তেঁতুল গাছ রয়েছে। ধ্যানলিঙ্গের সান্নিধ্যে এমনকি সেই অস্তিত্বরাও অল্প সময়ের মধ্যে মুক্তি লাভ করে যারা নিজের মুক্তির জন্য কোন কাজ করে নি। কারণ তাদের গঠন ধরে রাখা যায় না। এই ধরণের শক্তির সামনে অস্তিত্বটি বিলীন হয়ে যায়।

গাছে যে কাপড়ের টুকরোগুলো বাঁধা আছে তার কারণ হ'ল কিছু মানুষ বেয়াল্লিশ দিনের একটি বিশেষ সাধনা করেন। এটাকে বলা হয় শিবাঙ্গ সাধনা। তারা এই পুরো বেয়াল্লিশ দিন একটি কাপড়ের টুকরো তাদের শরীরে বেঁধে রাখেন। তাদের শরীরের কিছু অংশ ঘামের মাধ্যমে এই কাপড়ে জমা হয়। আজকাল আপনারা ডি-এন-এ-এর ভাষাতেও বলতে পারেন। এই ডি-এন-এ বা শরীরের স্মৃতিকে ব্যবহার করে ধ্যান লিঙ্গের সামনে কিছু বিশেষ প্রক্রিয়া ঘটে, যেখানে তাদের কার্মিক গঠন থেকে তাদের আমরা মুক্ত করে দিই।

বেয়াল্লিশ দিনের সাধনার শেষে এই প্রক্রিয়াটি করার পর তারা প্রভূত হাল্কা বোধ করে - শরীর ও মনের উপর এত দিনের জমে থাকা স্মৃতির থেকে।

প্রশ্ন: কেন ওখানে এতগুলো নিম্ন-মুখী সর্প-ভাস্কর্য রয়েছে?

সদগুরু: যোগিক সংস্কৃতিতে সর্প উচ্চতর শক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর কারণ হলো একটি সাপকে উত্তেজিত করলে যেরকম গতিবিধি হয় তার সাথে কুন্ডলিনীর গতি- প্রকৃতির খুবই মিল রয়েছে। এই জন্যই অনেক শক্তিস্থলে সাপের প্রতিকৃতি দেখতে পাবেন। সাধারণত উর্ধ্বমুখী ভাবে চিত্রিত দেখা যায়, কারণ আপনি দৈবের খোঁজ করছেন।

কিন্তু ধ্যানলিঙ্গে আপনি দেখবেন সাপের প্রতিকৃতিগুলো নীচের দিকে নেমে আসছে। কারণ এটা হচ্ছে দৈবশক্তির বর্ষন, দৈবের খোঁজ নয়। দৈব-কৃপার ভান্ডার, যার থেকে কৃপা ঝরে পড়ছে। এটাকেই সূক্ষ্মভাবে বোঝানোর জন্য আমরা ওই সাপের প্রতিকৃতিগুলো ঐভাবে প্রপাতের মতো নির্মিত করেছি।

প্রশ্ন: ধ্যানলিঙ্গে যাওয়ার পথে সিঁড়ির ধাপগুলো এতো উঁচু কেন?

সদগুরু: ধ্যানলিঙ্গ কোন পূজা-অর্চনার জায়গা নয়। এটা ধ্যানের জায়গা। ধ্যান কোনো কাজ নয়, এটা এমন কিছু নয় যা আপনি করবেন। এটা এমন কিছু যা আপনি হতে পারেন। আপনি চেষ্টা করলেই ধ্যান হবে না। আপনি যদি অনুশীলনের মাধ্যমে আপনার শরীর, মন, আবেগ এবং প্রাণশক্তিকে বিশেষ ভাবে পরিণত করেন - স্বাভাবিক ভাবেই আপনি ধ্যানমগ্ন হবেন।

সিঁড়ির ধাপগুলো এমনভাবে পরিকল্পিত হয়েছে যে যখন কেউ পায়ের গোড়ালি দিয়ে সিঁড়ির উপর চাপ দেয় - এটা তার শরীরকে বিশেষ ভাবে সক্রিয় করে তোলে।

সেইজন্য যারা ধ্যানলিঙ্গে আসছেন, তাদের জন্য আমরা সহজ কিছু পদ্ধতির ব্যবস্থা করেছি। সিঁড়ির ধাপগুলো এমনভাবে পরিকল্পিত হয়েছে যে যখন কেউ পায়ের গোড়ালি দিয়ে সিঁড়ির উপর চাপ দেয় - এটা তার শরীরকে বিশেষ ভাবে সক্রিয় করে তোলে। আর একটা ব্যাপার হলো, যখন আপনি পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য নিজের পা একটি বিশেষ উচ্চতার থেকেও উপরে তুলে, তার ওপর শরিরের ওজন ভর করে উঠছেন, তখন আপনার মূলাধার খুলে যাচ্ছে। এটা প্রয়োজনীয় উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।

পরের বার যখন আপনি উঁচু কোথাও চড়বেন - লক্ষ্য করবেন মূলাধারের চারপাশের পুরো জায়গাটা কীভাবে উদ্দীপীত হচ্ছে; যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি কেউ ধ্যানমগ্ন হতে চান।

যদি আপনি কোন যোগা প্রোগ্রামে আসেন, আমরা বিভিন্ন রকম অনুশীলনের মাধ্যমে এটা করে থাকি। কিন্তু ধ্যানলিঙ্গে যারা আসেন, তাদের অধিকাংশই ধ্যানের ব্যপারে কোন কিছুই জানেন না। কিন্তু যখন তারা ভেতরে যান এবং শুধুমাত্র বসে থাকেন, তারা ভাবেন পাঁচ মিনিটের জন্য বসবেন কিন্তু দেখা যায় ঘন্টার ও বেশী বসে আছেন।  

ধ্যানলিঙ্গের মধ্যে সেই সম্ভাবনা আছে যে কোন নির্দেশ ছাড়াই এটা আপনাকে ধ্যানমগ্ন করতে পারে। কিন্তু শরীরের মধ্যে কিছু প্রস্তুতি এবং গ্রহণশীলতা প্রয়োজন। ধ্যানলিঙ্গে পুরো জায়গাটা এমন ভাবে তৈরী করা হয়েছে যে অনেক রকম ভাবে এটা আপনার শরীরকে ধ্যানমগ্ন হতে প্রস্তুত করে।

প্রশ্ন: পরিক্রমাতে যে পতঞ্জলি ও বনশ্রী আছে, সেগুলো কি কোনভাবে শক্তি-প্রতিষ্ঠিত?

সদগুরু: পতঞ্জলি ও বনশ্রী হ'ল দেব-দেবী। এই দুজন আশ্চর্য-সুন্দর অস্তিত্বের ব্যপারে আমরা খুব সামান্যই বলেছি কারণ ধ্যানলিঙ্গের উপরই পুরো লক্ষ্য রয়েছে। এই দুটো ধ্যানলিঙ্গের মতো বহু মাত্রিক, প্রাণবন্ত বা চিরস্থায়ী নয়। কিন্তু তাদেরও নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আমরা তাদের সেভাবে গৌরবান্বিত করিনি। আমরা তাদের কেবল প্রতীক হিসেবেই রেখেছি, কিন্তু তাঁরাও তাদের মতো করে জীবন্ত। মানুষের জীবনে তাদের ফল ও প্রভাব রয়েছে।

বনশ্রী কে মূলত ধ্যানলিঙ্গের জন্য নারী প্রতিরূপ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু তার মতো একজন মানুষের জন্য ইনি খুবই সাধারণ স্ত্রী। ধ্যানলিঙ্গের তার চেয়েও বেশী কিছু প্রয়োজন। যখন আমরা ধ্যানলিঙ্গের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছিলাম , দক্ষিণ-পশ্চিম কোণটিতে লিঙ্গ-ভৈরবী করার কথা সবসময়ই আমার মনে ছিল। কিন্তু ধ্যানলিঙ্গ প্রাণপ্রতিষ্ঠা করার সময় এটা করার জন্য আমাদের হাতে সময় বা সামর্থ্য কোনটাই ছিল না।

ধ্যানলিঙ্গ নিজেই স্বয়ং-সম্পূর্ণ, কিন্তু সামগ্রিক ভাবে জায়গাটা একটু অসম্পূর্ণ ছিল। সুতরাং একবার যখন বেঁচে গেলাম, আমার মনে সর্বক্ষণই এটা ছিল। এখন লিঙ্গ ভৈরবী দক্ষিণ- পশ্চিম কোণাতে আছে - এটা একটা সম্পূর্ণ ব্যবস্থা।

প্রশ্ন: প্রত্যেকদিন এই নাদ আরাধনা কেন হয়?

সদগুরু: ধ্যানলিঙ্গের শক্তি একটা কঠিন দেওয়ালের মতো হয়ে যেতে পারে, কারণ এই লিঙ্গের চারপাশে যে শক্তি-ক্ষেত্র রয়েছে তা খুবই তীব্র। যাঁরা এটি ভেদ করে যেতে পারেন তাদের কাছে এটা খুবই আশ্চর্য-সুন্দর। অন্যদের জন্য, তারা এই স্থানে বসবেন কিন্তু শক্তি-ক্ষেত্রের বাইরেই থেকে যাবেন, শুধুমাত্র এর তীব্রতার জন্য। যদি এটা একটু দুর্বল তীব্রতার হ'ত তাহলে আরও অনেক মানুষ এর ভিতর প্রবেশ করতে পারতেন।   

সেইজন্য দিনে দুবার করে এই দেওয়ালে আমরা ফাটল আনতে চেষ্টা করি বিশেষ কিছু ধ্বনি ব্যবহার করে - কখনও সুমধুর ধ্বনি, কখনও বেসুরো শব্দ। সংগীতের যে সুর সৃষ্টি করা হয় তা ওখানে যারা বসে থাকেন তাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটের কথা ভেবে। যদি সুর বেসুরোও হয়, তবুও ধ্বনি সৃষ্টির উদ্দেশ্য পূরণ হবে। কারণ উদ্দেশ্যটা হল ওখানে যে ব্যাপারটা খুব তীব্র একটা কিছুতে অভিব্যক্ত হচ্ছে, এতটাই তীব্র যে সেটা প্রায় একটা কঠিন আবরনের মতন, সেটাকে একটু নমনীয় করা, যাতে সেটা সকলের জন্য কিছুটা প্রবেশযোগ্য, সুগম হয়।

আপনি এটা কয়েকটা চিৎকার করেও করতে পারেন বা হাতা-খুন্তি দিয়ে আওয়াজ করেও, যদি যথেষ্ট তীব্রতায় করেন। এতে হয়তো সামাজিক সৌন্দর্য বজায় থাকবে না কিন্তু আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য সাধন হবে। কিন্তু, আমরা এটাকে একটা অর্পন হিসেবে ব্যবহার করতে চাই, কারণ অর্পনের স্থিতিতেই মানুষ সবচেয়ে গ্রহণশীল থাকেন।  

সর্বদাই ভারতীয় জীবনশৈলীতে এই রকম হয়ে এসেছে যে মন্দিরে গেলে প্রত্যেকেই কিছু না কিছু অর্পন করেন। তার কারণ এই নয় যে ঈশ্বর আপনার কলা বা নারকেল খেতে চান। যদি আপনার কাছে কলা বা নারকেল না থাকে, আপনি অন্তত একটি পাতা অর্পন করুন। ধারনাটা হ'ল আপনি উৎসর্গের মনোভাব নিয়ে যাচ্ছেন। আপনি নিজেই উৎসর্গ হতে যাচ্ছেন। যখন আপনি এভাবে জাবেন, ওখানে যা লভ্য তার জন্য আপনি সবচেয়ে গ্রহণশীল থাকবেন।   

সুতরাং নাদ-আরাধনার সময়গুলো মানুষের জন্য সর্বাপেক্ষা গ্রহনশীল কারণ সেগুলো হলো অর্পনের সময়।

প্রশ্ন: একজন মানুষ কি ধ্যানলিঙ্গের মতো হতে পারে?

সদগুরু: প্রত্যেকটি মানুষ ধ্যানলিঙ্গের মতো হয়ে রাস্তায় হাঁটতে পারেন, সাতটি চক্রের প্রত্যেকটি চূড়ান্ত ভাবে স্পন্দিত অবস্থায়। এমন একটি দিন দেখতে খুবই ভালো লাগবে যেখানে অনেক মানুষ এরকম হবেন।

পরম্পরাগত ভাবে বললে, বলা যায় আমরা স্বয়ং শিবকেই সৃষ্টি করেছি। উদ্দেশ্যটা হ'ল মানুষের কাছে চিরদিনের জন্য একজন জীবন্ত গুরু থাকবেন।

ধ্যানলিঙ্গ হল জীবন্ত অস্তিত্ব, কারণ এটি সাতটি চক্রই নিয়ে এসেছে। শুধু পার্থিব শরীরটাই নেই। ধ্যানলিঙ্গ হ'ল সম্ভাব্য শ্রেষ্ঠ শক্তি-ক্ষেত্রের অন্যতম, ঠিক যেন একজন যোগীর মতো বসে আছেন। আর পরম্পরাগত ভাবে বললে, বলা যায় আমরা স্বয়ং শিবকেই সৃষ্টি করেছি। উদ্দেশ্যটা হ'ল মানুষের কাছে চিরদিনের জন্য একজন জীবন্ত গুরু থাকবেন।

আপনার নিজে নিজে সাধনা করা, আর একজন গুরুর সান্নিধ্যে সাধনা করার মধ্যে প্রভূত তফাৎ থাকে। খুব কম মানুষই সেই সুযোগ পান কারণ সব সময় সেটা হয়ে ওঠা বাস্তবে অসম্ভব। কিন্তু ধ্যানলিঙ্গের সাথে সকলের সেই সুযোগ রয়েছে ‌। এমনকি আপনি যদি ধ্যানের ব্যপারে কিছুই না জানেন, যদি কেবল কয়েক মিনিটের জন্য আপনি সেখানে বসেন, কোন নির্দেশ ছাড়াই আপনি ধ্যানমগ্ন হয়ে যাবেন, কারণ এই শক্তির প্রকৃতিটাই এরকম।  

সন্দেহবাদী বা যুক্তিবাদীদের এই ধারণাটা গ্রহন করতে কষ্ট হবে, কিন্তু খাতায়-কলমে, এই সূক্ষ্ম-শরীরের উপর একটি পার্থিব শরীর সৃষ্টি করা সম্ভব। আমরা একজন বিশাল অসম্ভব সুন্দর মানব সৃষ্টি করতে পারি, কিন্তু এটা খুবই আড়ম্বরপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া। বর্তমানে পার্থিব শরীর ছাড়াই সে ঠিক আছে, খুব শক্তিশালী ভাবে স্পন্দিত হচ্ছে। একবার যদি পার্থিব শরীর বানানো হয়, পার্থিব শরীরের সব সীমাবদ্ধতাও তার মধ্যে চলে আসবে। পার্থিব শরীর না থাকলে সময়ের সীমার কোন সমস্যা নেই। একজন অশরীরী অতিমানব অবশ্যই একজন শরীরী অতিমানবের থেকে ভালো, কারণ হাজার হাজার বছর সে থেকে যাবে।

প্রশ্ন: একবার যদি আমরা ধ্যানলিঙ্গ দর্শন করি, যেখানেই থাকি না কেন আমরা কি ধ্যানলিঙ্গকে উপলব্ধি করতে পারি?

সদগুরু: আপনার এটা বোঝা প্রয়োজন যে সময় এবং স্থান একটি সীমাবদ্ধতা, যতক্ষণ আপনি মনের মধ্যে আটকে আছেন, বিশেষ করে সচেতন মন। এমনকি যদি আপনি মনের গভীরতর মাত্রাগুলোতে যান, কোন স্থান-কাল বলে কিছু নেই।

যদি আপনার বাড়িতে একটি জায়গা রাখেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় রাখেন নিজের জন্য, সকালে বা সন্ধ্যায়, এবং শুধুমাত্র শান্ত হয়ে বসে থাকেন, ধ্যানলিঙ্গের শক্তি আপনার ভিতর থেকে আপনাকে ঘিরে রাখবে।

ধ্যানলিঙ্গ কোন বিশেষ জড় আকৃতি নয়, এটা একটা শক্তি-স্তম্ভ, যা স্থান-কাল মানে না। এমনকি সেই সব মানুষ যারা ধ্যানলিঙ্গ দেখেন নি বা এর কথা শোনেন নি, তাঁরাও এটা অনুভব করবেন, যেই মূহুর্তে তারা পর্যাপ্ত গ্রহণশীল হবেন। যেখানেই আপনি থাকুন না কেন, এমনকি আপনি যদি এই জায়গায় নাও এসে থাকেন, যদি আপনি নিজেকে একরকম ভাবে উন্মুক্ত রাখতে ইচ্ছুক থাকেন, ধ্যানলিঙ্গ আপনার জন্য সর্বদাই উপস্থিত। is.

অনেক মানুষের কাছে হয়তো এটা খুবই অবাস্তব শোনাবে, তাই তাদের অন্তত একবার দর্শন করে যাওয়াই সবচেয়ে ভালো। যদি আপনি ধ্যানলিঙ্গকে নিজের মধ্যে নিয়ে থাকেন, যদি আপনি সেখানে বসে থাকেন, ধ্যানলিঙ্গের মাধ্যমে আপনার ভিতর আধ্যাত্মিক বীজ বপন হবেই হবে। যদি আপনার বাড়িতে একটি জায়গা রাখেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় রাখেন নিজের জন্য, সকালে বা সন্ধ্যায়, এবং শুধুমাত্র শান্ত হয়ে বসে থাকেন, ধ্যানলিঙ্গের শক্তি আপনার ভিতর থেকে আপনাকে ঘিরে রাখবে।

যদি আপনার কোন দৃশ্যমান সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আপনি একটি ছবি রাখতে পারেন, যেটা আপনাকে প্রয়োজনীয় সাহায্য দেবে। সাহায্য এই জন্যই প্রয়োজন কারণ মানুষ মানসিক ভাবে বিক্ষিপ্ত। অন্যথায় কোন সাহায্যের প্রয়োজন নেই। ধ্যানলিঙ্গের উপস্থিতিতে থাকার ফলে যে আধ্যাত্মিক বীজ বপন হবে সেটি নিজেই নিজের যত্ন নেবে।